আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনীর তিনটি সংসদীয় আসনে এখন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১৬ জন প্রার্থী। তারমধ্যে ফেনী-১ আসনে ৪ জন, ফেনী-২ আসনে ৬ জন ও ফেনী-৩ আসনে ৬ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। যেখানে জেলার তিনটি সংসদীয় আসনের প্রতিটিতে বিএনপি থেকে দুইজন করে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়েছেন।

গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মনিরা হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফেনী-১ আসনে এখন পর্যন্ত চারজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তারমধ্যে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়েছেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য এস এম কামাল উদ্দিন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কাজী গোলাম কিবরিয়া।

ফেনী-২ আসনে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন ছয়জন। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী থেকে মনোনয়ন নিয়েছেন অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঞা, বিএনপি থেকে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. মশিউর রহমান বিপ্লব, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) থেকে সামসুদ্দিন মজুমদার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মোহাম্মদ একরামুল হক ভূঞা ও খেলাফত মজলিশ থেকে মোস্তাফিজুর রহমান।

অন্যদিকে, ফেনী-৩ আসনে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন ছয়জন। এর মধ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) থেকে শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, বিএনপি থেকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ জনি, এনসিপির মোহাম্মদ আবুল কাশেম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মো. সাইফ উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মো. মাহবুবুল হক রিপন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

এদিকে প্রত্যেক আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এ প্রসঙ্গে জানতে কথা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক ও ফেনী-১ আসনের সাংগঠনিক সমম্বয়ক রফিকুল আলম মজনুর সঙ্গে। দৈনিক ফেনীকে তিনি বলেন, সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে আমার মাধ্যমে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া আগেও নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে একাধিক মনোনয়ন নেওয়া হতো। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও নেতাকর্মীরা আমার মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। এটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ বা আলোচ্য বিষয় নয়।

মনোনয়ন সংগ্রহের বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী-২ আসনের আরেক প্রার্থী বিএনপির জাতীয় নির্বাহীর কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব স্পষ্ট কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। মনোনয়ন নিয়েছেন কিনা সেই বিষয়েও কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে মনোনয়ন সংগ্রহের বিষয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল লতিফ জনি বলেন, দলের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তবে তিনি যদি নির্বাচন না করেন তখন এ আসনে কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সেটিও দলের সিদ্ধান্ত। বিগত সময়ে দলের জন্য ত্যাগ ও কাজগুলো বিবেচনা করলে আমিও তখন একজন যোগ্য দাবিদার। সেখান থেকেই আমার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা।

ফেনী জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মনিরা হক জানান, তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। নির্বাচনে সুন্দর পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসন বদ্ধপরিকর।

ফেনী-১ আসনে খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ (পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া) আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে চেয়ারপারসনের পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।

এ সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু তালেব, জেলা আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান নয়ন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট পার্থ পাল চৌধুরী, জেলা জিয়া মঞ্চের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শাহজালাল ভূঁইয়া সবুজ, ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাফর হোসেন, ফুলগাজী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হুদা শাহীন, জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মনির আহাম্মদ সম্রাটসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু তালেব বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষে আমরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক। ফেনী-১ আসনের জনগণ তার নেতৃত্বে আবারও কাজ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

এদিকে, গত ২৩ নভেম্বর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শারীরিক নানা অসুস্থতা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

উল্লেখ্য, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ফেনী-১ আসন থেকে এর আগে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।